নিবেদন
১০ জুলাই ২০২২
দুপুর ২:৪৫
নয় বছর বয়সে বাংলা পাঠ্যবই দেখে দেখে একটা ছবি আঁকার সময়,সেই ছবির প্রেক্ষাপটে কিছু লাইন মাথায় গুনগুন/ভনভন করা শুরু করে।ছবি আঁকার খাতার পেছনে পেন্সিল দিয়ে লিখি লাইনগুলো।রেখে দিয়েছি ঐ ছেড়া পাতাটা। এটাই প্রথম। একে মুখচোরা,স্পর্শকাতর বা সংবেদনশীল বা আবেগী মেয়ে-বাচ্চা। তারওপর আবার অ-সুখের শৈশব ।ফলে মাথার গুনগুনানি,ভনভনানির নিয়মিত হয়ে পরাই যেন নিয়তি ছিল!
যাহোক,আমার লেখা প্রকাশের কথা ভাবিনি সেভাবে কখনো। সাহসই হয়নি। মনে হতো,কী সব ছাইপাশ ভাবি আর লিখি পাগলের মতো, কেও বুঝবেও না,আর আমার লেখাও কী লেখা! আমার কবিতাও কী কবিতা! তবে তো তেলাপোকাও পাখি! মাইকেল মধুসূদন রবি ঠাকুর, জীবনানন্দ এদের যে লেখাকে আমরা কবিতা,গল্প,উপন্যাস ইত্যাদি নামে ডাকি,সে একই নাম কী আমার লেখারও হবে! লজ্জায় আমি একা একাই মরতাম।
যাহোক,অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই সরাসরি প্রকাশক/শুভাকাঙ্ক্ষীরা বই প্রকাশের বিষয়ে বললেও আমল করিনি। কারণ আমার যেহেতু অন্যের লেখা পড়ার ক্ষেত্রে লেখার মান টা নজরে আসে, হাবিজাবি
গানের বা কবিতার কথায় ভীষণ
রাগ হয় এবং এসব
কারণে অনেক সময় নতুন লেখা পড়ার আগ্রহ জাগে না, তাই
নিজের লেখার বেলায়ও সেটা রক্ষার বিষয়টা মনে থেকেছে খুব ভালো করেই। আর যে দুএকজন পাঠকও
আমার আছে বা হবে এরা
সবাই ই লেখা
বোঝার জন্য যথেষ্ট পারগ। যাহোক, আমার
লেখার মান "খারাপ" ধরে নিয়েই যে এগুলো
ভেবেছি তা নয়, বিষয়টা হল, আমি
যেহেতু সেভাবে কখনো লেখা প্রকাশের উদ্দেশ্যে লিখিনি বা
সেটার গঠনগত দিকে বিশেষভাবে নজর রাখিনি (সত্যি
বলতে আমি বুঝিওনা ওসব অত!খুবই বাজে স্টুডেন্ট!),শুধু নিজের
মনের ভাব প্রকাশ নিমিত্তেই লিখেছি, তাই
একটা সংশয় ছিল।
তবুও
কিভাবে কিভাবে অজান্তেই একটি লেখা প্রকাশ হয়েছে ২০১৮ বইমেলায়। সেটা পরে বলবো।
তাহলে
এখন নিজে চাচ্ছি তার কারণ এই নয় যে,
আমি জেনে গেছি আমার লেখার মান অনেক ভালো !! কারণটি মহামারী মহাশয়,জনাব কোভিড ! এই একজীবনে এটিও
প্রত্যক্ষ করার পর অনেকের মতো
আমিও দার্শনিক ভাবাক্রান্ত হয়েছি !
মৃত্যুর
নিষ্ঠুরতার চেয়েও অনিশ্চয়তা /অনির্দিষ্টতা বা স্বেচ্ছাচারিতাটা বেশি দৃষ্টিগোচর
হল। মনে হল,হুট করেই
যদি সব শেষ হয়ে
যায়, যদি সব শেষ হবার
পথে, পৃথিবী ধ্বংসের পথে অন্য অনেকের আগেই আমি শেষ হয়ে যাই, তাহলে “রয়ে-যাওয়া”
মানুষগুলোকে তো কিছু
দিয়ে গেলাম না! এই যে এত
লেখা এত বচন, এত
অনুভূতি, কেবল ডায়রিবদ্ধ হয়েই রইলো, মরলে টেবিলবদ্ধও হয়ে থাকবে।
"লোকে
কী দেখে আমাকে স্মরণ করবে" বা "মানুষকে জানানোর একটা দায়বদ্ধতা" ইত্যাদি মনে হচ্ছিল সময়ে সময়ে....
সবমিলাইয়া এসময় আর লেখার মান-টান লইয়া পরিয়া থাকিলাম না ! (আবেগ!!সবই আবেগ!!😭)
(হার্ডকপি বই প্রকাশ বেজায় ঝামেলা-সাপেক্ষ!🙄🥴
তাই ডিজিটাল বই অর্থে এই ব্লগের প্রকাশ।🤓☺️)
নিবেদক
বুশরা আহমেদ

.jpg)

Comments
Post a Comment