কেও ছাই কেও খাঁটি

 

ছবি-সংগৃহীত

আবর্জনা পুড়ে ছাই হয় আর স্বর্ণ পুড়ে খাঁটি হয়।

ফুটতে থাকা পানি ডিমকে শক্ত করে আর আলুকে করে নরম।

যে দারিদ্র্য নজরুলকে করে মহান, সেই দারিদ্র্য- আমাকে করে চোর, বাটপার!

 

আলুর ক্ষেত্রে সিদ্ধ হওয়া মানে হল নরম হওয়া,আর ডিমের সিদ্ধ মানে শক্ত! পরিস্থিতি একই কিন্তু বস্তুভেদে প্রতিক্রিয়া ভিন্ন। মানুষও সিদ্ধ হয়!।তবে কেবল হিমালয়ে গিয়ে ধ্যানে বসে নয়। এই ধরাধামে, জাগতিক মানুষের মাঝে থেকেও হয়।

পরিস্থিতি বা জীবন বেশিরভাগ মানুষেরই খারাপ। সুখ-দুঃখ আপেক্ষিক; যেহেতু সবার বৈষয়িক বা অবৈষয়িক অভাববোধ অনুরূপ নয়। সবাই- নিজের মতো করে দুঃখী-সুখী, -খুশি এবং অ-তৃপ্ত। কিন্তু সেই "দুঃখ-দায়ক" পরিস্থিতি কার ওপর কী প্রভাব ফেলবে এটা নির্ভর করে ব্যক্তির একান্ত-স্বতন্ত্র শৌর্য-বীর্যের ওপর, তার আত্মিক ঐশ্বর্য সৌকর্যের ওপর। কেননা বিরূপ পারিবারিক ইতিহাস(পূর্বপুরুষ অর্থে) ও নিজ জীবনে উপস্থিত পারিবারিক,পারিপার্শ্বিক,সামাজিক প্রভৃতির প্রতিকূলতায় অবস্থান করেও নিজ গুণে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হবার নজির পৃথিবীতে আছে।তাইতো,দুঃখ পেয়ে কেও যেখানে ভাবে,"আমি যা সয়েছি, অন্যকেও সেই শাস্তি পেতে হবে" সেখানে কেও পণ করে,"আমার মতো কষ্ট আমি আর কাওকে পেতে দেবো না"!

"যখন কোনো কিছু আপনাকে বেদনা/কষ্ট দেয়,তখন দুটি ঘটনা ঘটতে পারে। হয় আপনি আহত হবেন নয়তো তা থেকে জ্ঞান আহরণ করবেন।তাহলে জীবনে যে যত বেশি কষ্ট পেয়েছে,তার তত বেশি জ্ঞানী হবার কথা।কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত বেশিরভাগই তত বেশি আহত হয়ে যায়।এভাবে তারা নিজেকেই নিজের বিপরীতে দাঁড় করায়। কিন্তু, যখন কিনা পুরো পৃথিবী আপনার বিপরীতে,তখন কি আপনার উচিৎ না যে,নিজের-অন্তত নিজের পাশে দাঁড়ানো!-সাধগুরু,অনুবাদ-বুশরা আহমেদ।"

মানুষের দুঃখ,দুর্দশা, দৈন্য,ত্যাগ,তিতিক্ষা সেই ফুটতে থাকা পানির মতো কাজ করে। কিংবা আগুনের মতো। ছাই হওয়া বা খাঁটি হওয়া এখন তার ওপর।

 

১৭ আগস্ট ২০২২

বাসে,অলিয়স ফ্রসেসের উদ্দেশ্যে

.১৩ দুপুর


(আবর্জনা ও স্বর্ণের পোড়ার তুলনাটি তারাশঙ্কর বন্ধ্যোপাধ্যায়ের "সপ্তপদী" উপন্যাস থেকে নেয়া।সবাইকে এ অসাধারণ লেখাটি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।)

চাইলে দেখতে পারেন---আমি নকল সোনা দিয়ে তোমায় যাবো না ঠকিয়ে-বুশরা আহমেদ

Comments

Post a Comment

Popular Posts